আগামী সপ্তাহে শপথ নিতে পারেন ইশরাক
আপলোড সময় :
২১-০৪-২০২৫ ১০:৪০:৩০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২১-০৪-২০২৫ ১০:৪০:৩০ অপরাহ্ন
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন মেয়র পদে আগামী সপ্তাহে শপথ নিতে পারেন, এ নিয়ে তার প্রস্তুতি চলছে। তার ঘনিষ্ঠ একজন সময়ের আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সম্মতি দিয়েছেন। সবকিছু বিবেচনা করে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলেন। ইশরাক হোসেনও দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত জানতে সরাসরি চলে যান লন্ডনে। সেখানে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। ইশরাক হোসেনের ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, কয়েকদিন আগে তিনি লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছেন। বর্তমান রাজনৈতিক দিক ও পরিবর্তিত বাস্তবতায় তার মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দলই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইশরাক হোসেন আদালতে মামলা জিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হওয়ার রায় পাওয়ার পর তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে লন্ডন যান। লন্ডনে যাওয়ার আগে তিনি জানান, তারা দীর্ঘ প্রতীক্ষিত একটি রায় পেয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি ন্যায়বিচার পেয়েছেন। এখন এ বিষয়ে দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তসহ সব বিষয়ে পরামর্শ করতে তিনি লন্ডনে যাচ্ছেন। সেখানে দলের শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক হবে।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। বিএনপির ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হন। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেছিলেন ইশরাক। নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের গেজেট প্রকাশ করে। এরপর তাপস শপথ গ্রহণ করে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত বছর আগস্টে আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশের সব সিটি করপোরেশনের মতো ঢাকার দুই মেয়রের পদও শূন্য ঘোষণা করা হয়। সেই মামলার রায়ে ২৭ মার্চ ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন আদালত।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক সেদিন বলেছিলেন, মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। আমি মেয়র হতে পারব বা মেয়র হিসেবে শপথ নেব কি না সেটা সম্পূর্ণ দলীয় বিষয়।
অবিভক্ত ঢাকার প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে ইশরাক হোসেন। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন তিনি। বিএনপি এই তরুণ নেতাকে দল থেকে সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়। নির্বাচনি প্রচার কার্যক্রমে বেশ সাড়া ফেলেন এই রাজনীতিক। শেষমেশ ভোটে হেরে যান আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে।
আদালতের রায়ে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রায়ের পক্ষে-বিপক্ষে ব্যাপক আলোচনার ঝড় ওঠে। জামায়াত ও নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা আদালতের এই রায়ের তীব্র সমালোচনা করেন।
বিএনপির অনেকে নেতা শেষ সময়ে এসে দায়িত্ব নিতে ইশরাক হোসেনকে নিরুৎসাহিত করেন। তাদের মতে, ভোটে জয়ী হয়ে মেয়র হওয়ার মতো যোগ্য প্রার্থী ইশরাক হোসেন। তাকে আদালতের রায়ের চেয়ে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন করে জয়ী হওয়ার পক্ষে। এই যাত্রায় শপথ থেকে বিরত থাকলে দলের ও ইশরাক হোসেনের ইমেজ বাড়বে বলে মনে করেন অনেকে।
যদিও তার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, যতটুকু সময় আছে তার পুরোটা কাজে লাগাতে চান ইশরাক হোসেন। এই সময়ের মধ্যে ভালো কিছু কাজ নগরবাসীকে উপহার দিতে পারলে তার ভবিষতের জন্য তা ইতিবাচক হবে। ইশরাক নির্বাচনের আগে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার কিছুটা বাস্তবায়ন করতে পারলেও সফল হবেন তিনি।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ সময়ের আলোকে বলেন, এ বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু বলতে পারব না। বিভিন্ন দিক মাথায় রেখে আলোচনা হচ্ছে। আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে দায়িত্বভার দিয়েছি। উনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই হবে। একটু অপেক্ষা করতে হবে।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর বিএনপি বলেছিল কোনো ভোটই হয়নি। যদিও ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১ অক্টোবর ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষণা করেন আদালত। রায় পেয়ে শপথ নিয়ে এখন নগরের দায়িত্ব পালন করছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন।
অন্যদিকে, ২০২০ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন তাবিথ আউয়াল। ভোটে হেরে তিনিও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। ওই মামলার রায় এখনও হয়নি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স